Menu

কোমর ও অন্যান্য ব্যথা

বিভিন্ন ব্যথা ও তার আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদে জানুন। ফোন করুন +৯১৯৩৩৯৬৫৭৮৫৭

স্পাইনাল কর্ড Stimulator বা মেরুদণ্ডের পেসমেকার

স্পাইনাল কর্ড স্টিমুলেটর হল হৃদযন্ত্রে যে পেসমেকার বসানো হয় সেই ধরনের একটি যন্ত্র। এর জন্য একে মেরুদণ্ডের পেসমেকারও বলা হয়। প্রধানত এটি বসানো হয় সেই সমস্ত ক্ষেত্রে, যেখানে মেরুদণ্ড বা মেরুদণ্ড থেকে হাত-পায়ে ছড়িয়ে পড়া ব্যথায়, যে-ব্যথার চিকিৎসায় প্রচলিত সমস্ত ব্যবস্থাই ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকায় এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয় সেই সমস্ত রোগীর ক্ষেত্রে, যারা মেরুদণ্ডের অপারেশনের পরেও সুস্থ হতে পারেনি। যে সমস্ত ক্ষেত্রে অপারেশন প্রয়োজন কিন্তু অন্যান্য নানা কারণে অপারেশন সম্ভব নয়, সেই সমস্ত রোগীর ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করা হয়।

এই সমস্ত রোগী যে-ধরনের ব্যথায় কষ্ট পান তাকে বলা হয় নিউরোপ্যাথিক পেইন। এ-ক্ষেত্রে বাইরের কোনও উত্তেজনা ছাড়াই নার্ভগুলি উত্তেজিত হয় এবং এই উত্তেজনা যখন মস্তিষ্কে পৌঁছয় সেগুলিকে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হিসেবে অনুভূত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় বিশেষ কিছু ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয় এই উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য। কিন্তু দেখা গেছে, প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই সমস্ত ওষুধ কাজ করে না এবং রোগীদের ব্যথা-যন্ত্রণা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতেই থাকে।স্পাইনাল কর্ড স্টিমুলেটর এই অস্বাভাবিক সিগন্যাল বা উত্তেজনাকে প্রশমিত করে।

স্পাইনাল কর্ড স্টিমুলেটরের দুটি অংশ। একটি অংশকে বলা হয় লিড, যা সরু তারের মতো। এটি স্পাইনাল কর্ডের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। এটি যুক্ত থাকে একটি পাওয়ার জেনারেটরের সঙ্গে (ব্যাটারিচালিত)। এই পাওয়ার জেনারেটর ইলেট্রিকাল সিগন্যাল তৈরি করে এবং তা স্পাইনাল কর্ডের মধ্যে তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক সিগন্যালগুলিকে বন্ধ করে। ফেইলড ব্যাক সার্জারি সিনড্রোম (যেখানে মেরুদণ্ডের অপারেশনের পরেও সমস্যা থেকে গেছে বা বেড়ে গেছে) হল এই চিকিৎসার প্রধান ব্যবহার। এ ছারাও আরও নানান ব্যথার চিকিৎসায় এই যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে। যেমন মাইগ্রেন, ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া, Post Scar/Post Traumatic Neuralgia ইত্যাদি।

এই ধরনের চিকিৎসা আমেরিকাতে শুরু হয় ১৯৬৭ সাল থেকে। এটি একটি ছোট্ট অপারেশন, কিন্তু সাফল্যের হার ভীষণ ভাল। উন্নত দেশগুলিতে এটি বহুল প্রচলিত এবং ব্যবহৃত। কিন্তু আমাদের দেশে এটি তেমন প্রচলিত নয়। তার কারন হল এটি একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা। তবে ইদানীংকালে চিকিৎসা বিমার সুযোগ থাকায় ভারতবর্ষেও এর প্রয়োগ বাড়ছে।